কি করে বলবো তোমায়" পর্ব- ১ " Romantic Love Story " Bengali Story "
গল্প: কি করে বলবো তোমায়
Written by : এম এ ইসলাম
পর্ব____1__/আজকে শুরু
---এ্যালার্মের আওয়াজে হঠাৎ করে ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। চোখ খুলে দেখি ৭টা বেজে গেছে।
বিছানা থেকে উঠে একটু বসলাম, পাশে থাকা মায়ের ছবিটা হাতে নিয়ে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরতেই চোখ থেকে দু-ফোটা পানি ঝড়ে গেল। মায়ের ছবিতে একটা চুমু খেয়ে টেবিলে রেখে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম ওয়াশরুমে।
আজ একটা এন্টারভিউ আছে। এই নিয়ে ৮টা ইন্টার ভিউ দিয়েছি প্রায় সবগুলোতেই উত্তীর্ন হয়েছি কিন্তু ঘুষ দিতে পারিনি বলে শেষ পর্যন্ত আর চাকরিটা হয়নি।
দেখা যাক এইটাতে কি হয়,,?
দেরি না করে রেডি হয়ে নিলাম। বের হতে যাবো ঠিক তখনই কলিং বেল বেজে উঠলো।
দরজা খুলতেই দেখি বাড়িওয়ালার মেয়ে ঐশী. নাস্তা হাতে দাড়িয়ে আছে।
-ভেতরে আসতে বলবেন না(ঐশি)
-ও সরি, আসুন
-আম্মু আপনার জন্য নাস্তা পাঠিয়েছে(ঐশী)
-কিন্তু আমিতো এখন বেড়োবো, আমার তাড়া আছে।
-কিন্তু নাস্তা করবেন না(ঐশী)
-প্লিজ কিছু মনে করবেন না, অন্য একদিন।
কথাটা বলেই বেড়িয়ে আসলাম।
রাস্তায় আসতেই একটি রিক্সা নিয়ে অফিসের সামনে চলে এলাম,
অফিসে ঢুকেই দেখলাম আমার মতো অনেকে বসে আছে।
ইন্টারভিউ দেয়ার জন্য।আমিও গিয়ে বসে পড়লাম এক কোণে।
একে একে সবাই ইন্টারভিউ দিলো, অনেকক্ষণ পর আমার ডাক আসলো।
ইন্টারভিউ দিলাম, মোটামুটি ভালো। শেষ করে বাইরে এসে বসলাম। আমার পাশের দুজন লোক বলাবলি করছিলো---
-আরে, ইন্টারভিউ ভালো দিই আর খারাপ, ঘুষ ছাড়া কি আর চাকরি হবে,,,?
-ঠিক বলেছেন ভাই,
বর্তমানে ট্যালেন্টের কোনো দামই নেই, সবাই টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যায়।
তাদের কথা শুনে এই অফিসের এক বয়স্ক পিয়ন বললেন-
-শুনো, তোমরা কোথায় কি দেখেছো জানিনা, কিন্তু এই অফিসের যিনি বস, তিনি খুব ভালো মানুষ। প্রতিভা কে গুরুত্ব দেন,,টাকাকে নয়..
ওনার কথা শুনে একটু ভালো লাগল। তারপর ঘন্টাখানেক পর ফলাফল ঘোষনা করা হলো।
আমি সহ আরো অনেকে সিলেক্ট হয়েছি।
কাল থেকে জয়েন করতে হবে।
তার আগে অফিসের যিনি বস তিনি আমাদের কিছু বলবেন. তাই আমাদের সবাইকে ওনার রুমে নিয়ে যাওয়া হলো।
কিন্তু রুমে ডুকতেই আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম।
এ আমি কাকে দেখছি, ..তাহিয়া.
ও এখানে কেন,,?
আগে যাকে কখনো দেখবো না বলে প্রতিঙ্গা করেছিলাম, আজ আবার তার সামনে দাড়িয়ে আছি।
কিন্তু ওর তো বিয়ে হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো...? তাহলে ও এখানে কি করছে..?
-তাহিয়া আমায় দেখে চমকে গিয়ে বললো------
-তালহা, তুই এখানে..?
সবাই তাহিয়ার কান্ড দেখে অবাক হয়ে গেল। তাহিয়ার হুট করে মনে পড়ল ও সবার সামনে কথা বলছে।
এরপর ও নিজেকে কন্ট্রোল করে কড়া বসের মতো সবাইকে কিছু কড়া উপদেশ দিতে লাগল।
আর আমি শুধু ওর মুখের দিকে চেয়েছিলাম।
সে কি চাহনি ওর, বিধাতা যেন ওর মধ্যে একটি আলাদা রূপ দিয়ে দিয়েছে।
চোখ ফেরানোই দায়.
সেই আগের মতো কথা বলার স্টাইল, পারসোনালিটি সব মিলিয়ে এক অনন্য তাহিয়া, এক আলাদা মায়া ওর চেহারায়।
ওর মুখশ্রী যেন না ভোলার মত।
হয়তো এই কারনেই এক সময় ওর প্রেমে পড়েছিলাম আমি।
কিন্তু আজ সবই অতীত।
ভাগ্যের বিবর্তনে ও আজ আমার অফিসের বস। আর আমি ওর সামান্য কর্মচারী মাত্র।
জীবনটা বড়ই অদ্ভদ।
তাহিয়া তার উপদেশ শেষ করে সবাইকে লিভ নিতে বলল। ওর দিকে শেষ বারের মত তাকিয়ে আমি সবার সাথে যখনই চলে আসব তখনই তাহিয়া পিছন থেকে বলল--
-তালহার সাহেব,
আপনি একটু থাকুন।
-(আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললাম)
সবাই চলে যাওয়ার পর, তাহিয়া তার চেয়ার থেকে দৌড়ে উঠে চলে আসলো আমার সামনে।
এসেই একটি মায়াময় হাসি দিলো।
কত বছর পর আবার ওর হাসিমাখা মুখটা দেখতে পেলাম।
তারপর অভিমানের সুরে একটানা অনেকগুলা প্রশ্ন করল--
--তালহা, তুই এখানে.? কেমন আছিস তুই..? এত বছর কোথায় ছিলি ?
ইসস, চেহারাটার কি হাল করে রেখেছিস,, চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে, নিজের প্রতি একটুও যত্ন নিস না, তাইনা??
তোর কি এই ৪ বছরে আমাদের কথা একটিবারের জন্যও মনে পড়েনি..?
এতটা স্বার্থপর কিভাবে হলি তুই..?
তুই জানিস, তুই নিরুদ্দেশ হয়ে যাবার পর নানু তোর জন্য কত কেঁদেছে,,?
আব্বু, চাচ্চু, জেঠুরা তোকে কত খুজেছে,,?
কোথাও তোকে পাওয়া পায়নি।
ফুফু চলে যাওয়ার পর তুই যে এমন একটা কাজ করবি কে জানত বল,,?
কিরে কিছু বল?
ও কথাগুলো বলতে বলতে হাপিয়ে গেছে।
-আপনি কেমন আছেন?
-তুই আমাকে আপনি করে বলছিস কেন?
-সবসময়তো তাই বলতাম,জানেন না?
-হুম জানি,কিন্তু একটা সময় তুই করেই বলতি,হঠাৎ করে একদিন আপনি করে ডাকা শুরু করলি,জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন, কোনো উত্তর দিস নি।
-কিছু প্রশ্নের উত্তর না জানাই ভালো
-কেন?
-ম্যাম আমি এখন আসি,কথাটা বলেই চলে আসব আর তাহিয়া আমার হাতটা ধরে ফেললো.
#চলবে___To_be_Continue......
#নোট: গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো আপনার মুল্যবান মতামত জানাবেন,
আর অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন
আমাদের ব্লগের কোন গল্প কপি করা সম্পূর্ণ ভাবে নিষেধ।
অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে,
Post a Comment