অবহেলা : পর্ব-২ " OBOHELA " Romantic Valobasar Golpo" Romantic Bangla Stories "
রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প 💞
গল্প : আপনজনের অবহেলা😥😥
#পর্ব_২
#Episode_2
আমি এবার তাহিয়ার রুমের দিকে গেলাম আর তাহিয়া বলে ডাকদিলাম ৷ তাহিয়া আমার দিকে যেই তাকলো আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম ৷ তাহিয়ার চোখ লাল ও ফুলে আছে ৷ হয়তো কান্না করে এ অবস্থা হয়েছে ৷
এবার তাহিয়া দৌড়িয়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে কান্না করে দিল ৷ আমি তো বেশ অবাক হলাম ৷
কোথায় ছিলে তুমি যান আমি কত টেনশনে ছিলাম ৷ আমি মনে করেছি তুমি আমাদের ছেড়ে চলে গেছো ৷ তুমি আমায় ছেড়ে কখনও যাবেনা আগে প্রমিস কর ৷ 【 কান্না করে বলছে 】
আমি তাহিয়া কে বুক থেকে সরিয়ে দিয়ে বললাম কোথায় যাব আমি ৷ তোমরা ছাড়া তো আর কেউ নেই আমার ৷ তাহলে কোথায় যাব বল আমি ৷
তাহিয়াঃ হুমমম মনে থাকে যেন আর যেখানে যাবে আমাকে বলে যাবে ৷【 অভীমানি সুরে আর জড়িয়ে ধরে বলল】
আমিঃ তাহলে আমাকে কলেজে ওই ভাবে সবার সামনে থাপ্পড় মারলে কেন ৷
তাহিয়া : তাহলে তুমি ওই মেয়েটার সাথে ওমন ভাবে হেসে কথা বলছিলে কেন ৷ তুমি যান কতটা কষ্ট হয়েছিলো ৷ 【অভীমানি সুরে】
আমিঃ কই হেসে কথা বলছি ৷ আর ও তো আমার ক্লাসমেট ওর সাথে তো কথা বলতেই পারি ৷ আর ওর সাথে কথা বলেছি তো তোমার কি ৷
তাহিয়াঃ আমার কি মানে আমি তোমাকে ভালবাসি ৷ আমার নিজের জিবনের থেকেও তোমাকে ভালবাসি ৷ তোমার সরলতা কে আমি ভালবেসে ফেলেছি ৷
এবার আমি তাহিয়ার থেকে এক ঝাটকায় দুরে সরে আসলাম ৷
আমিঃ কি বলছ এসব তুমি যান তুমি কি বলছ ৷ আর এ হয়না তাহিয়া ৷ আমি একজন এতিম ৷ তোমার বাবা আমাকে আশ্রয় দিয়েছেন ৷ আমি তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবনা ৷ আর তা ছাড়া তোমার বাবা জানতে পারলে আমাকে কোনদিন ক্ষমা করবেন না ৷ আমাকে তুমি ভুলে যাও ৷
তাহিয়া এবার জোড়ে জোড়ে কান্না করতে লাগল আর বলল ৷ আমি বাবাকে সব বুঝিয়ে বলব ৷ প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না ৷ 【 কান্না করতে করতে বলল】
প্লিজ তাহিয়া এমন পাগলামি করনা ৷ আর সবাই বাড়িতে আছে ৷কেউ শুনে ফেলে দিলে আমায় সবাই ভুল বুঝবে তাহিয়া ৷
আমি আর কথা না বাড়িয়ে যেই তাহিয়ার রুম থেকে বাইরে আসব তখন দেখি তাহিয়ার মা দড়জার পিছনে দাড়িয়ে আছে ৷ হয়তো সব শুনে ফেলে দিছে ৷ আমি তাহিয়ার মার দিকে তাকিয়ে দেখি তাহিয়ার মা কান্না করছে ৷ হয়তো তাহিয়ার চোখে পানি তাহিয়ার মা সহ্য করতে পারিনি ৷
আমিঃ তাহিয়া মার কাছে গিয়ে বললাম ৷ খালাম্মা তাহিয়ার কোন দোষ নেই ৷ সব দোস, আমার ৷ ওকে কিছু বলবেন না ৷ আর কাল সকালে আমি এই শহর ছেড়ে চলে যাব ৷ শুধু আজকের রাত টুকু থাকতে দিন ৷ খালাম্মা কিছু বলল না শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ৷
আমি এই বলে নিজের রুমে চলে,আসলাম আর রুমের দড়জা বন্ধ করে দিলাম ৷ আর কান্না করতে লাগলাম ৷ আবার সেই দুই বছর আগে পুরোনো কথা মনে পরে গেল ৷ সেদিনও ঠিক এভাবে আমাকে একজন জড়িয়ে ধরেছিল ৷ আর এই কথাগুলো বলেছিলো ৷ তবে সেই কথাটা মিথ্যা কথা আর অভিনয় ৷ হতে পারে এটাই আমার নায্য পাওনা ৷ পুরোনো কথা ভাবতে ভাবতে আবার চোখদিয়ে অনবরত পানি পড়ছে ৷ এভাবেই সারারাত কাটিয়ে দিলাম ৷
আর এদিকে তাহিয়ার মা রাতে ঘটে যাওয়া সব কাহীনি তাহিয়ার আব্বুকে বলল ৷ তাহিয়ার আব্বু বলল হুমমম ছেলেটা বেশ ভাল খুব সহজসরল ৷ যেইটা বলি সেইটা শুনে ৷ কোনদিন কথার প্রতিখেলাপ করেনি ৷ আর ছেলেটা ভাল শিক্ষিতো ৷ তাহিয়ার সাথে ভালো মানাবে ৷ আর রিক্তকে 【তাহিয়ার ছোট বোন】 একেবারে ছোটবোনের মত দেখে ৷ তাই ভাবছি কাল সকালে মাহমুদের সাথে কথা বলে তাহিয়ার সাথে বিয়ের কথাটা সেরে ফেলব ৷
পরেরদিন খুব সকালে উঠে আমি আমার ব্যাগ পত্র গুছিয়ে ৷ তাহিয়ার বাবার জন্য একটা চিঠি লিখে সেটা বিছানার উপর রেখে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়লাম ৷
আবার রেল স্টেশনের দিকে হাটতে থকলাম ৷ আবার কোন অন্য শহরে চলে যেতে হবে ৷ এটা ভেবেই খুব কান্না পাচ্ছে যে তাহিয়া মেয়েটা খুব ভালবাসে আমায় ৷ আর পাগলি বোন টিকে খুব মিস করব ৷ খালা খালুকে খুব মনে পড়বে ৷ কিন্তু কিছু করার নেই ৷
আমি ট্রেনের জন্য স্টেশনে বসে আছি ৷ ট্রেন আসতে 1 ঘন্টা দেড়ি হবে ৷
আর এদিকে তাহিয়ার মা ঘুম থেকে উঠে তাহিয়ার কাছে গিয়ে কাল রাতের কথা সব বলল তাহিয়ার র কাছে ৷ তাহিয়া তা শুনে প্রায় পাগলের মত হয়ে গেল খুশিতে তার মাকে দড়িয়ে ধরল ৷
এবার তাহিয়া দৌড়িয়ে মাহমুদের রুমে গেল ৷ আর যখনি দড়জায় নক করতে যাবে তখন দেখে দড়জা খোলা রয়েছে ৷ তাহিয়া তখন রুমের ভিতের যেয়ে দেখে মাহমুদ নেই ৷ আর মাহমুদের জামা কাপড় ব্যাগ বই পত্র কিছু নেই ৷ তখনি চোখ গেল বিছানার উপর ৷ তাহিয়া চিঠি টা হাতে নিয়ে পড়তে থাকলো ৷ চিঠি পড়া শেষে তাহিয়া চিৎকার দিয়ে আম্মুওওওওওও বলে ডাক দিয়ে বেহুশ হয়ে পড়ে গেলো ৷
সাথে মাহমুদের রুমে গিয়ে দেকে তাহিয়া বেহুশ হয়ে পড়ে আছে ৷ তাহিয়ার মা সাথে সাথে তাহিয়াকে খাটের উপর তুলল ৷ তাহিয়ার বাবা তাহিয়ার হাতে একটা কাগজ দেখলো ৷ আর কাগজ টা খুলে দেখে একটা চিঠি ৷ তাহিয়া বাবা চিঠি পড়তে লাগল ৷
শ্রদ্ধেয় খালুজান ,
প্রথমেই সালাম নিবেন ৷ আশা করি আপনি এতোক্ষনে সব জেনে গেছেন ৷ এতে তাহিয়ার কোন দেষ নেই খালুজান ৷ তাই আমি এ শহর থেকে চলে যাচ্ছি ৷ আর কোনদিন হয়তো দেখা হবে না ৷ তাই এই এতিম ছেলে টাকে ক্ষমা করে দিবেন ৷ আর নিজের শরিরের দিকে একটু খেয়াল রাখবেন ৷
এতিম ছেলে
তাহিয়ার বাবা চিটি টা পড়া মাত্র প্রথমে বাস স্টান্ডে গেল খুজতে কিন্তু পেলনা ৷ তারপর রেল স্টেশনের দিকে গেল ৷ আর তখন দেখল মাহমুদ একটা বে়ঞের উপরে মাথা নিচু করে বসে আছে ৷
তাহিয়ার বাবা মাহমুদের কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলাল ৷ আর তখনি মাহমুদ উপরে তাকিয়ে দেখে খালুজান ৷
আমিঃ খালু আপনি এখানে ৷
খালুঃ হুমমম আমার ছেলেটাকে নিয়ে নিতে এসেছি ৷
আমিঃ কিছুই তো বুজলাম না ৷
খালুঃ কাল রাতে তাহিয়ার মা সব বলেছে আমায় ৷ আর তখন ভাবলাম আমার মেয়ের জন্য এর থেকে ভাল ছেলে কেউ নেই ৷ তাই আমার মেয়ের জামাই কে নিতে এলাম ৷
আমিঃ কিন্তু খালু আমি একজন এতিম আর....【কিছু বলতে দিল না】
খালুঃ চুপপপপপ আর কোন দিন নিজেকে এতিম বলবেনা ৷ আমরা কেউ না তোমার ৷
তারপর আমি খালুকে জড়িয়ে ধরলাম ৷ তারপর আমি আর খালু বাড়ি চলে আসলাম ৷
এসে দেখি দুই মহারানি আমার উপর রাগ করে আমার সাথে কথা বলছেনা ৷ আমি প্রথমে রিক্তের কাছে গেলাম ৷ তারপর আমার বোনটিকে কোলে তুলে নিলাম আর যেই দুইগালে দুইটা পাপ্পি দিয়েছি আর ওমনি হেসে দিল ৷ যাক বাবা ছোট টার তো রাগ ভাঙাতে পারলাম এখন বড় টাকে দেখতে হবে ৷
আমি তাহিয়ার রুমে গেলাম যেয়ে দেখি তাহিয়ার চোখ লাল হয়ে আছে ৷ বুজতে পারলাম খুব কান্না করছে আমি চলে যাওয়ার পর ৷
আমি এবার তাহিয়া সামনে গিয়ে বললাম সরি তাহিয়া ৷ আর কোন দিন তোমায় ছেড়ে যাবনা ৷ দেখলাম তাহিয়া কোন পাত্তাই নেই ৷ তাই তাহিয়ার হাত ধরে সোজা আমার বুকে টেনে নিলাম ৷ তাহিয়া ছাড়ানোর চেষ্টা করছে বাট পারছেনা ৷ প্লিজ আমায় তুমি ক্ষমা করে দাও ৷ কথা দিচ্ছি আর কোন দিন তোমায় ছেরে যাবনা ৷
ঃ না তোমার কোন ক্ষমা নেই আর আমি আপনাকে ভালবাসিনা ৷
আমিঃ সত্যি ভালবাসনা
-- না 【অভীমানি সুরে】
আমিঃ তাহলে আর কি করা আবার চলে যাই আর কোন দিন আসবনা ৷ এইকথা বলে যেই আসতে যাব আর তখনি তাহিয়া আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরল ৷
-- না তোমাকে কোনদিন যেতে দেব না তোমাকে শক্ত করে জড়িয়ে দরে রাখব ৷
আমিও পাগলি টাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম ৷
চলবে............
【বাকি টুকু আগামী পর্বে দেওয়া হবে
পর্ব-১ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
Post a Comment